ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপ থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পটুয়াখালীতে কিশোর গ্যাংয়ের হামলার শিকার হয়েছে আব্দুস সালাম নাবিল নামের এক শিক্ষার্থী। সে পটুয়াখালী কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের ৭ম শ্রেনীর ছাত্র। গত ১১ ডিসেম্বর দুপুর দেড়টার দিকে ঘটা ঘটনাটি ১৬ ডিসেম্বর বিকেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অবিভাবক ও শিক্ষকদের নজরে আসে। ঘটনাটি নিয়ে আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
নাবিলের বাবা মোঃ আঃ শাকুর বলেন, ১৬ ডিসেম্বর বিকেলে আমার পরিচিত এক ব্যাক্তি হোয়াটসঅ্যাপে দুটি ভিডিও পাঠায়। ভিডিওতে দেখতে পাই আমার ছেলেকে বেশ কয়েকজন কিশোর মিলে প্রচন্ড মারধর ও অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করছে এবং জীবন নাশের হুমকি দিচ্ছে। আমার ওই পরিচিতকে জিজ্ঞেস করলে ভিডিওটি তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পয়েছেন বলে জানান। পরবর্তীততে আমার ছেলেকে জিজ্ঞাসা করলে সে বিষয়টি স্বীকার করে জানায়, কিছুদিন আগে " কালেক্টরেট এক্স গার্লস" নামের একটি ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপে তাকে যুক্ত করা হয়। কিন্তু গ্রুপটিতে খারাপ বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা হওয়ায় সে গ্রুপ থেকে বেড়িয়ে যায় । এভাবে কয়েকবার ঘটার পরে নাবিল গ্রুপটিতে তাকে এ্যাড করতে নিষেধ করে কমেন্ট করে। সে লেখে এরপর তাকে গ্রুপে এ্যাড করা হলে খারাপ হবে।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১১ ডিসেম্বর দুপুরে পরীক্ষা শেষে বাইরে বের হলে নাবিলকে স্কুলের গেটের সামনে থেকে সরকারি মহিলা কলেজের সামনের গলিতে টেনে নিযে যায়, পটুয়াখালী সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেনীর ছাত্র মোঃ আলি, মোঃ সায়েম, মোঃ সামির, মোঃ সালমান, মোঃ হুজাইফা, ফারদিন, প্রভাস, মুনতাসির, তাসিন ও আবিদ। মেসেঞ্জার গ্রুপে খারাপ হবে লেখায় জুবিলীয়ানদের অপমান করা হয়েছে বলে সেখানে গিয়ে মারধরের পাশাপাশি জীবন নাশের হুমকি দেয় তারা।
এতে শঙ্কিত হয়ে আঃ শাকুর আরো বলেন, ক্লাস সেভেনের ছাত্রদের আচরন যদি এমন হয় ভবিষ্যতে তারা কেমন হবে? ঘটনাটি জড়িতদের অবিভাবক, শিক্ষক, জেলা প্রশাসন ও পুলিশকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। এদেরকে শাস্তির আওতায় না আনলে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠবে।
এব্যাপারে কথা হয় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী সামিরের বাবা মোঃ শামীম আকনের সাথে, তিনি প্রতিবেদককে বলেন, এঘটনায় তিনি লজ্জিত। বন্ধুদের প্ররোচনায় পড়ে তার ছেলে এ ঘটনায় নিজেকে জড়িয়েছে। এমন ঘটনা তিনি ও তার পরিবার সমর্থন করেন না। গতকাল বিষয়টি জেনে তিনি তার ছেলেকে শাসন করেছেন। এ ব্যাপারে আহত ছেলেটির অবিভাবকরা যে শাস্তি দেবেন তা তিনি মাথা পেতে নেবেন।
পটুয়াখালী সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আলাউদ্দিন বলেন, ঘটনাটি শুনেছি এটি বিদ্যালয়ের বাইরে ঘটেছে। তবে আমার বিদ্যালয়ের ছাত্ররা এতে জড়িত বলে জানতে পেরেছি তাই অভিযুক্ত ও তাদের অবিভাবকদেরকে আগামী ২৫ ডিসেম্বর বিদ্যালয়ে ডাকা হয়েছে। সত্যতা যাচাই সাপেক্ষে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।###
দৈ. বার্তা সরণি / কাশেম/ নাজিম