সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে প্রতিবন্ধী স্বামীকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন সুফিয়া বেগম। জনপ্রতিনিধিদের কাছে নিজের অসহায়ত্বের কথা বললেও মেলেনি কোনো সহায়তা। মাথার উপর ভেঙ্গে পড়া শঙ্কা নিয়ে কোনমতে দিন পার করছেন তিনি।
উপজেলার রায়গঞ্জ পৌর সভার বেতুয়া গ্রামের বাসিন্দা সুফিয়া বেগম। তার স্বামী গোলাম হোসেন এক সময় বহুতল ভবনে রঙের কাজ করে চলাতেন সংসার। একমাত্র মেয়েকেও দিয়েছেন বিয়ে।
আজ বুধবার (২৭ নভেম্বর) বেলা ১২ টার দিকে রায়গঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরে প্রতিবন্ধী গোলাম হোসেন ও তার স্ত্রী সুফিয়া বেগমের সাথে দেখা মেলে। এক সময়ের উপার্জনক্ষম স্বামীর চিকিৎসা আর সংসারের খরচ যোগাতে উপজেলা পরিষদ চত্বরে অন্যের কাছে অর্থ চেয়ে সহায়তা চাচ্ছেন তাঁরা।
সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় অসহায় এই দম্পতির সাথে তারা জানায়, অভাবের সংসারে একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দিয়ে হঠাৎ স্টোক জনিত কারণে গোলাম হোসেন প্যারালাইস হয়ে বিছায় পড়ে আছে।
স্ত্রী সুফিয়া বেগমের বয়স্ক ভাতা আর অন্যের কাছে হাত পেতে সামান্য অর্থেই কোন রকমে চলে তাদের সংসার। যেখানে অনাহারে নিজের টিকে থাকায় দায় সেখানে প্রতিবন্ধী স্বামীকে নিয়ে অকুল পাথারে পড়েছেন প্রায় পয়ষট্টি বছরের এ দম্পত্তি।
স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সবুজ শেখ জানান, পরিবারটি খুব অসহায়। টাকার অভাবে প্রায় ৬ মাস ধরে বিছানায় কাতরাচ্ছেন প্রতিবন্ধী গোলাম হোসেন। হৃদয়বান ব্যক্তিরা এগিয়ে এলে হয়তো বেঁচে যাবে একটি জীবন। স্ত্রী ফিরে পাবে স্বামীর ছায়াতল।
সুফিয়া বেগম বলেন, অন্যের দুয়ারে হাত পেতে আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি স্বামীর উন্নত চিকিৎসা। স্থানীয়ভাবে ডাক্তার-কবিরাজ দেখালেও কোনো সুফল মেলেনি। গত ছয় মাস ধরে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। কোমর থেকে পা পর্যন্ত সম্পূর্ণ অবশ হয়ে গেছে। এছাড়া পেশার স্টকসহ অন্যান্য রোগব্যধির কারণে বিছানা এখন নিত্যসঙ্গী। এ দিকে চিকিৎসা ব্যয় কত হতে পারে জানতে চাইলে বলেন, দীর্ঘমেয়াদি এ চিকিৎসায় অন্তত ৪ লক্ষ টাকার মতো খরচ হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো: ইলিয়াস হাসান শেখ জানান, প্রতিবন্ধী গোলাম হোসেনের বিষয়ে আমি অবগত আছি। খুব দ্রুতই তাকে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড দেওয়া হবে। এ ছাড়াও তিনি আবদেন করলে অর্থনৈতিক সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।
দৈ. বার্তা সরণি / একে/নজরুল